বাঘায় জমি জবরদখলের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন

বাঘায় জমি জবরদখলের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন

দৈনিকচারঘাট ডেস্ক: রাজশাহীর বাঘায় ৪৫ বছর পূর্বে ক্রয়কৃত জমির উপরে সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে জবরদখল করে জমির গাছপালা ও ফসল কেটে বিক্রি-সহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভুগি আসলাম হোসেন। রোববার (১৫ জুন’২৫) সকাল সাড়ে ১১ টায় বাঘা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। আসলাম হোসেন উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠকালে, জমির খতিয়ান, দাগ ও জমির পরিমান উল্লেখ করে আসলাম হোসেন বলেন, বাউসা মৌজায় তিনটি দাগে মোট ৯৮ শতাংশ জমি আমার নিজের ও আমার বাবার খরিদ মূলে প্রাপ্ত সম্পত্তি। যাহা ৪৫ বছর ধরে আমরা ভোগদখল করে আসছি।

গত পাঁচ আগষ্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো: রেজাউল করিম ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা খরিদকৃত সম্পত্তি আড়ানির জোতরঘু গ্রামের জামাল উদ্দীন জুমন গংদের ওয়ারিশ স্বত্ত দাবি করে ২৭ শতাংশ জমির ১০টি আমগাছ কেটে বিক্রি করে। এরপর ৪৫ শতাংশ জমি জবর দখল করে আবাদ করা ভুট্টা কেটে নিয়ে যায়।

সর্বশেষ ১২ জুন ২৬ শতাংশের একটি জমিতে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দখলে নেয়। সেই সাইন বোর্ডে লেখা হয়েছে এই জমির মালিক মরিয়ম বেগম ও জাহিদুল ইসলাম (খালেক)। ১৩ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের নের্তৃত্বে জুমন,জুয়েল,মিজান ও আরাফাতসহ ১০/১২ জন আমাকে হত্যার উদ্দ্যেশে লৌহার রড়, হাতুড়ি ও হাসুয়া নিয়ে বাড়ির গেট ভাংচুরের চেষ্টা করে।

আমি বাড়ির মফস্বল দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্নরক্ষা করি। পরে তারা বাড়ির পাশে একটি জমির ফসলাদি কেটে জমি দখলে নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা রামদা নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি পালিয়ে বাড়িতে এসে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি অবগত করলে তারা থানায় অভিযোগ দিতে বলেন।

তাদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্ত্রী সকেনা বেগমের সাথে কথা বলে সাক্ষীদের নাম দিতে বলে। কিন্তু রেজাউল করিমের ভয়ে কেউ স্বাক্ষী দিতে রাজি হয়নি। এমনকি আমি নিজেও স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে আসলাম বলেন,খরিদ করা .৪৫ শতাংশ ও .২৭শতাংশ জমির শর্ত নিয়ে আমার পিতা আমির উদ্দীন বাদি হয়ে একরাম গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলার রায়ে আমরা ডিগ্রী পায়। তিনি আরো বলেন, দেশের পট পরিবর্তনের একমাস পর থেকে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে খরিদকৃত সেইসব সম্পত্তি জবর দখল করে নেয়। কিন্তু রেজাউল করিম কোনভাবেই জমির মালিক নন। অথচ তিনি জমি বিক্রতাদের পক্ষে ওয়ারিশ স্বত্ব দাবি করে জমি জবর দখল করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আসলাম আরো বলেন, প্রাণনাশের হুমকিতে অসায়ত্ববোধ করে নিরাপত্তাহীনতার অভাবে বাড়িতে থাকতে পারছিনা। তিনি তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবরদখল থেকে নিজ দখলে নেওয়ার জন্য আইনী সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসলামের সাথে ছিলে তার স্ত্রী সকেনা বেগম ও ছেলে জাহিদ হাসান।

এবিষয়ে জানতে চেয়ে রেজাউল করিমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে তার মুঠোফোনের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মিজান নামে একজন দাবি করেছেন,ওয়ারিশ স্বত্তে জমি পাওনাদার।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আফম আছাদুজ্জামান জানান, জমি-জমা জবরদখল ও ভয়ভীতির অভিযোগ করেছেন আসলাম হোসেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।