ফার্মেসিগুলোতে বেশি তাপে ওষুধের কার্যকারিতা হারাচ্ছে

ফার্মেসিগুলোতে বেশি তাপে  ওষুধের কার্যকারিতা হারাচ্ছে
সজল ( তথ্য সংগ্রহ /স/টু) ছবি

দৈনিক চারঘাট রির্পোটারঃ চারঘাটে রোগ নিরাময়ের ওষুধ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হলে তার কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে। শুধু তাই নয় ওইসব ওষুধের প্রয়োগ কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। উন্নত দেশগুলোতে ওষুধ সংরক্ষণের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

কিন্তু আমাদের দেশে ফার্মেসিতে কোন ওষুধ কত তাপমাত্রায় কীভাবে রাখতে হবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার সঠিক নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না। মৌসুমে টানা তাপদাহ চলছে। ফার্মেসিগুলোতে ওষুধগুলো পড়ে থাকে কোন রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই। এতে ওষুধগুলোর মান নষ্ট হচ্ছে।


বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বাজারে প্রচলিত ওষুধের প্রায় ৯০ শতাংশই ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য।


এসব ওষুধ ঠান্ডা ও শুকনা স্থানে আলো থেকে দূরে রাখতে হয়। কিন্তু বেশ কয়েক দিন থেকে রাজশাহীর গরম ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠানামা করছে। যার প্রভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ওষুধের দ্রব্যগুণ। অনেক ওষুধের দোকান ছাদেও নয়। যার কারণে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় থাকছে ওষুধগুলো।


সরেজমিনে চারঘাট বাজারে বিভিন্ন ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধের নির্দেশিকায় বা মোড়কে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার নির্দেশনা রয়েছে। রাজশাহী ও এর পাশ্ববর্তী অঞ্চলে আবহাওয়ার পারদ ঠেকছে ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই অবস্থায় তাপপ্রবাহে নির্দেশিকার অনুযায়ী ওষুধ সংরক্ষণ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।


চারঘাট বাজারে বেশিরভাগ ফার্মেসিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের (এসি) ব্যবস্থা নেই।  ফ্যান ও রেফ্রিজারেটর ছাড়া ওষুধ সংরক্ষণে কোল্ড চেইন ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন, টিকা, অয়েন্টমেন্ট, জেল, ফুড সাপ্লিমেন্ট, ডায়াগনোসিস কিটের মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীর গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। এমনকি ওষুধ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা বাড়ছে।


শনিবার (১৪ জুন) সকালে চারঘাট মেডিকেল মোড় এলাকা, বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোন দোকানে কোল্ড চেইন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই। চারঘাট বাজারে ও মেডিকেল মোড় সংলগ্ন ফার্মেসিগুলোতেও একই অবস্থা। অনেক দোকানদার জানেই না যে ওষুধ সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রার প্রয়োজন আছে।


এই অঞ্চলে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে জরুরি ওষুধের কার্যকারিতা বা গুণমান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন ওষুধ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিতে কোল্ড চেইন মেনে চলা অনেক জরুরি। ব্লাড প্রডাক্ট, ভ্যাকসিন-জাতীয় ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের কিট ৪ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয়।

এছাড়া অন্যান্য ওষুধ ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা যায়। বেশি তাপমাত্রা বাড়ার কারণে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হয় এমন ওষুধ কার্যকারিতা হারাবে। এগুলো আবার মূল্যবান এবং জীবন রক্ষাকারী ওষুধ।


এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ রাজিউল করিম বলেন, ওষুধের গায়ে যেগুলো নির্দেশনা আছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। অনেক ইনসুলিন এবং অয়েন্টমেন্ট আছে যেগুলো রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে হবে। এগুলো যদি রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে এগুলো ওষুধের মান কমে যাবে।( তথ্য সংগ্রহ /স/টু)

এছাড়াও অনেক ওষুধ আছে যেগুলো সাধারণ রুম টেম্পারেচারে ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। তাপপ্রবাহে যাতে ওষুধের গুণগত মান নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ( তথ্য সংগ্রহ /স/টু)


ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে এবং যেগুলো দোকানে রেফ্রিজারেটর নেই সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে ওষুধ প্রশাসন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক কে এম মুহাসীনিন মাহবুব বলেন, আমরা ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকি করছি। ( তথ্য সংগ্রহ /স/টু)

তাপপ্রবাহে কারণে যেগুলো ওষুধে নিদের্শনা দেয়া আছে সেগুলো ওষুধ যাতে ফ্রিজে রাখা হয় সেইদিকে খেয়াল রাখছি। অভিযানে কোথাও গেলে যদি দেখতে পাই যে দোকানে ফ্রিজ নাই কিংবা ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না তাহলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জায়গায় ওষুধের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য কাজ করছি।