জলের নীচে ডুব থাকতে পারে দীর্ঘক্ষণ, বসবাসও জলেই! এই উপজাতির অবিশ্বাস্য ক্ষমতা সত্যিই বিস্ময়ের

দৈনিকচারঘাট ডেস্ক: পৃথিবীতে ১৯০ টিরও বেশি দেশ রয়েছে এবং প্রতিটি দেশ একে অন্যের থেকে আলাদা। প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে। এই প্রতিবেদনে, আমরা একটি রহস্যময় উপজাতি সমন্ধে আলোচনা করব, যাদের অনন্য জীবনযাত্রা আপনাকে ভাবাবে।
এই উপজাতিটি জলে বাস করে এবং খুব কম সময়েই স্থলভাগে থাকে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন – ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ফিলিপিন্সের উপকূলে পাওয়া বাজাউ উপজাতি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জলকে তাদের আবাস বলে আসছে। ‘সি জিপসি’ নামেও পরিচিত এই উপজাতিটি দক্ষ ডুবুরি এবং জলের নিচে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস রোধ করে রাখতে পারে। এই অনন্য উপজাতি সম্পর্কে আরও জেনে নেওয়া যাক।
যাযাবর জীবনধারা
এই উপজাতির লোকেরা দক্ষ নাবিক এবং চমৎকার ফ্রিডাইভার। বহু শতাব্দী ধরে, এই উপজাতি যাযাবর জীবনযাপন করে আসছে। ঋতু অনুসারে এরা এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যাতায়াত করে। বাজাউ উপজাতির লোকেরা কাঠের পোল হাউস এবং লেপা-লেপা নামক হাউসবোটে বাস করে। আধুনিক বিশ্বে, এই উপজাতির লোকেরা এখনও মাছ ধরার জন্য বর্শা ব্যবহার করে।
ডাইভিং বিশেষজ্ঞ
এই উপজাতির লোকেরা দুর্দান্ত ডুবুরি এবং কোনও সরঞ্জাম ব্যবহার না করেই ২০-৩০ মিটার গভীরতায় ডুব দিতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই লোকেরা প্রায় পাঁচ মিনিট জলের নীচে তাদের শ্বাস আটকে রাখতে পারে, যা অনেক পেশাদার ডুবুরি এবং ক্রীড়াবিদদের কাছেও বিস্ময়।
বিজ্ঞানীদের মতে, বাজাউ জনগণের জিনগতভাবে বর্ধিত প্লীহা রয়েছে যা তাদের দীর্ঘ সময় ধরে তাদের জলের নিচে থাকতে সাহায্য করে।
তারা কাঠের চশমা এবং ঐতিহ্যবাহী বর্শা ব্যবহার করে খালি পায়ে ডুব দেয়। এই উপজাতির শিশুরা খুব অল্প বয়সেই সাঁতার শিখে ফেলে। এই উপজাতির বেশিরভাগেরই জীবন মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল।
পরিবর্তন ঘটছে
সমুদ্রের পরিবেশ পরিবর্তন এবং সরকারি স্থানান্তর উদ্যোগের কারণে উপকূলীয় সম্প্রদায়গুলিতে মানুষের আগমন দেখা গিয়েছে। এই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলি সত্ত্বেও, বাজাউ জনগণ তাদের সামুদ্রিক ঐতিহ্য বজায় রেখেছে।
বাজাউ সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা একটি বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী জীবনধারা দেখার এক অনন্য সুযোগ করে দেয়। নীল জলে এই উপজাতির কাঠের নৌকা, সাধারণ ক্যানোতে খেলাধুলা করা শিশুদের এবং প্রাণবন্ত প্রবাল প্রাচীর প্রত্যক্ষ করা একটি স্মরণীয় এবং আকর্ষণীয় দৃশ্যের সৃষ্টি করে।