চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি নারী

দৈনিক চারঘাট ডেস্ক: প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি নারী মহাকাশে পা রাখতে যাচ্ছেন। এই অবিশ্বাস্য স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলেছেন রুথবা ইয়াসমিন একজন পদার্থবিদ, প্রকৌশলী এবং নিরলস স্বপ্নচারী।
ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে তাঁর যাত্রা শুরু। শৈশব থেকেই অজানাকে জানার গভীর কৌতূহল তাঁকে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে উদ্বুদ্ধ করে। ২০১৪ সালে ম্যাসাচুসেটসের মাউন্ট হোলিওক কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক (গণিতে মাইনরসহ), পরবর্তীতে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ডেটা সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আলাবামা থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করে নিজের জ্ঞানকে পরিপূর্ণতা দেন। স্পেস নেশনের মিশনে নির্বাচিত
রুথবা ‘স্পেস নেশন’-এর Moon Pioneer Mission-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। ১৬ এপ্রিল, ২০২৫-এ যখন এই মিশনের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন সামাজিক মাধ্যমে তা আলোড়ন তোলে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই মিশনে অধিকাংশ সদস্যই নারী, যা মহাকাশ অভিযানে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।
ইভিএ স্পেশালিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ
মিশনে রুথবার দায়িত্ব ছিল ইভিএ (Extra Vehicular Activity) Specialist হিসেবে। এর আওতায় তাঁকে মহাকাশ স্যুট পরে চাঁদের পৃষ্ঠে হাঁটা, রেডিয়েশন প্রতিরোধ এবং ওঝজট (In-Situ Resource Utilization) প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাঁদের মাটি থেকে সম্পদ আহরণ করতে হয়েছে।
প্রশিক্ষণে রুথবা ছিলেন গড়ড়হ Base-এ দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং পরবর্তীতে Mission Control-এর একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। একবার লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে ত্রুটির সময় তিনি তাঁর দলের সঙ্গে মাত্র ৬০ সেকেন্ডের ব্যবধানে সফলভাবে সমস্যা সমাধান করেন—একটি তাৎক্ষণিক, সাহসী সিদ্ধান্ত যা প্রাণরক্ষা করে।
মহাকাশে নারীর অংশগ্রহণ
রুথবা মনে করেন, “মাত্র ১১% মহাকাশচারী নারী হওয়া হতাশাজনক নয়, বরং এটি পরিবর্তনের সুযোগ।” তাঁর মতে, ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানে নারীরা হতে পারে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও নেতৃত্বের নতুন মুখ।
মহাকাশে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ
স্বাস্থ্য রক্ষা, মানসিক স্থিতি এবং টিম ওয়ার্ক-মহাকাশে এগুলোই বাঁচার মূল চাবিকাঠি। রুথবার অভিজ্ঞতায়, নিয়মিত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, ওয়ার্কআউট এবং সামাজিক সংযোগ-এই উপাদানগুলো মহাকাশে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রুথবার লক্ষ্য এখন আরও বড়। তিনি চান চাঁদে পা রাখা প্রথম বাংলাদেশি নারী হতে। তাঁর গবেষণা, প্রযুক্তি পরীক্ষা ও নতুন অভিযানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি মহাকাশ গবেষণায় বাংলাদেশের নাম আরও উজ্জ্বল করতে চান।
রুথবা ইয়াসমিন বলেন, ‘এই যাত্রা শুধু আমার নয়, এটি বাংলাদেশের নারীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন’
অনুপ্রেরণার নাম: রুথবা ইয়াসমিন
রুথবার গল্প আমাদের শেখায়—স্বপ্ন যদি দৃঢ় হয়, চেষ্টা যদি নিরবচ্ছিন্ন হয়, তবে চাঁদও আর দূরের কিছু নয়। ভবিষ্যতের মহাকাশযাত্রায় তিনি হবেন শুধু একজন অভিযাত্রী নয়, এক যুগান্তকারী পথপ্রদর্শক।